ইফতার করার সময় দোয়া পড়া কি বিদআত।
ইফতার করার সময় দোয়া পড়া কি বিদআত।
উত্তর: ইফতারের সময় আল্লাহুম্মা সুমতু লাকা,,, দোয়া পড়া জায়েয হাদীস দ্বারা প্রমাণিত।
নিম্নে হাদীস উল্লেখ করা হলো।
حدثنا مسدد ، حدثنا هشيم ،عن حصين ، عن معاذ بن زهرة أنه بلغه أن النبي صلى الله عليه وسلم كان إذا كان أفطر قال: اللهم لك صمت ،وعلي رزقك أفطرت
অর্থাৎ: হযরত মুয়ায বিন যুহরাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু এর সূত্রে বর্ণিত। তাঁর নিকট হাদীস পৌঁছেছে যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইফতারের সময় বলতেন।
আল্লাহুম্মা লাকা সুমতু ওয়া আলা রিযক্বেকা আফতারতু।
সুনানে আবু দাউদ - হাদীস নং ২৩৫৮
শারহুস সুন্নাহ লিল বাগাবী হাদীস নং ১৭৪১
শোয়াবুল ঈমান হাদীস নং ৩৯০২
আপত্তি নং ১: হাদীস খানা দ্বঈফ কেননা, ইমাম শুয়াইব আরনাউত শারহুস সুন্নাহ এর তাখরিজ করতে গিয়ে বলেন,
فالحديث مرسل অর্থাৎ: হাদীস খানা মুরসাল। উক্ত হাদীস খানা মুরসাল হওয়ার জন্য দ্বঈফ।
উত্তর: উক্ত বর্ণনা খানা মুরসাল, আর মুরসাল বর্ণনা জুমহুর মুহাদ্দিসীনে কেরাম এর ঐক্যমতে গ্রহণযোগ্য।
ইমাম মুল্লা আলী ক্বারী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি, ইমাম আবু দাউদ রাহমাতুল্লাহি আলাইহি এর উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন,
قال أبو داود هذا هذا مرسل: أي نوع مرسل وهو المنقطع لكن المرسل حجة عندنا و عند الجمهور ،
ইমাম আবু দাউদ রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন,সনদটি মুরসাল আর মুরসাল হলো মুনকাতঈ এর এক প্রকার। তবে জুমহুর মুহাদ্দিসীনে কেরাম এর নিকট হুজ্জাত বা দলীলের উপযুক্ত।
মিরকাতুল মাফাতিহ খন্ড ২ পৃষ্ঠা নং ৪০ হাদীস নং ৩২৩ এর ব্যাখ্যায়
তিনি আর এক জায়গাতে বলেন,
قلت : المرسل حجة عند الجمهور ،
অর্থাৎ: আমি ( মোল্লা আলী কারী) বলি, মুরসাল হাদীস জুমহুর ( উলামায়ে কেরাম এর) নিকট গ্রহণযোগ্য।
মিরকাতুল মাফাতিহ খন্ড ৩ , পৃষ্ঠা নং ৭৬ , হাদীস নং ১০০৬ এর ব্যাখ্যায়
অতএব: মুরসাল হাদীস জুমহুর উলামায়ে কেরাম এর ঐক্যমতে গ্রহণযোগ্য।
সুতরাং : উক্ত হাদিসকে মুরসাল এর দোহাই দিয়ে দ্বঈফ প্রমাণ করা চরম পর্যায়ের মূর্খতা।
দ্বিতীয় জবাব: উক্ত হাদীস খানা ইমামে আবু দাউদ রাহমাতুল্লাহি আলাইহি তাঁর সুনান গ্রন্থের মধ্যে উল্লেখ করেছেন। কিন্তু তিনি কেনো আপত্তি করেননি। আর উসুল হল ইমামে আবু দাউদ যখন তার সুনান গ্রন্থের মধ্যে কোন সমালোচনা ছাড়াই হাদিস উল্লেখ করেন , তখন হাদিস খানা গ্রহণযোগ্য হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে। আর এই উসুলটি লা- মাযহাবীদের নিকট ও গ্রহণযোগ্য।
কেননা,ক্বাজী শাওকানী আপন পুস্তকের মধ্যে উল্লেখ করেছেন।
وقد سكت عنه ابو داود والمنذري لذلك و جميع رجال إسناده عند أبي داود ثقات ،
অর্থাৎ: ইমামে আবু দাউদ আর ইমাম মুনযিরী রাহমাতুল্লাহি আলাইহিমা এই ( বর্ণনায়) নিরবতা অবলম্বন করেছেন। অর্থাৎ কোনো সমালোচনা করেননি। আর এই সনদের বর্ণনাকারী ইমাম আবু দাউদ রাহমতুল্লাহি তায়ালা আলাইহি এর নিকট বিশ্বস্ত।
অতএব: প্রমাণিত হলো যে, ইমাম আবু দাউদ রাহমাতুল্লাহি আলাইহি যেই হাদিসটি উল্লেখ করে নিরবতা অবলম্বন করবে, ওই বর্ণনাটি আহলে হাদিসদের নিকট সহীহ আর এই হাদিসের সমস্ত বর্ণনাকারী ইমাম আবু দাউদ রাহমাতুল্লাহি আলাইহি এর নিকট গ্রহণযোগ্য।
আহলে হাদিসের আর একজন মাওলানা আব্দুল কাদির হাসারী, আপন পুস্তকে উল্লেখ করেন।
یہ حدیث صحاح میں سے سنن ابوداؤد کی ہے جس پر انہوں نے سکوت کیا ہے تو یہ حدیث قابل استدلال ہے
অর্থাৎ: এই হাদীসটি সিহাহে সিত্তার মধ্যে সুনানে আবু দাউদের মধ্যে আছে,যেই হাদীসটি উল্লেখ করার পর তিনি নিরাবতা অবলম্বন করেছেন।তো এই হাদীস থেকে দলীল গ্রহণ করা যাবে।
ফাতাওয়া হাসারীয়া খন্ড ৩, পৃষ্ঠা নং ১৪
অতএব: গাইর মুকাল্লিদদের উসুল অনুযায় উক্ত হাদীসটি গ্রহণযোগ্য।
আপত্তি নং ২ : উক্ত হাদীসের মধ্যে একজন বর্ণনাকারী আছে,যার নাম মুয়ায বিন যুহরাহ, তিনি অপরিচিত বর্ণনাকারী এইজন্য উক্ত হাদিস খানা গ্রহণযোগ্য না।
জবাব: বর্তমান যুগের তথাকথিত শাইখগণ এই আপত্তি করে থাকে। কিন্তু পূর্বের কোন গায়ের মুকাল্লিদ আলিম এই আপত্তি করার সাহস পায়নি। কেননা, এই বর্ণনাকারী সম্পর্কে
ইমাম ইবনে কাসির দিমাশক্বী
রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন,
معاذ بن زهرة و يقال معاذ أبو زهرة الضبي ،تابعي
অর্থাৎ: মুয়ায বিন যুহরাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু তিনাকে মুয়ায আবু যুহরাহ ও বলা হয়,তিনি একজন তাবেঈ।
তার পর ইবনে কাসীর রাহমাতুল্লাহি আলাইহি উল্লেখ করেন,
ذكره إبن حبان في الثقات
অর্থাৎ: মুয়ায বিন যুহরাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু কে ইমাম ইবনে হিব্বান তার সেক্বাহ গ্রন্থের মধ্যে উল্লেখ করেছেন।
আত তাকমীলু ফিল জারহে ওয়াত তাদীল খন্ড,১ পৃষ্ঠা নং ৪৮ ,রাবী নং ১০
ইমাম ইউসুফ মিযযী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি তার তাহযীবুল কামাল, খন্ড ২৮ , পৃষ্ঠা নং ১২২ ,রাবী নং ৬০২৬ এর মধ্যে উল্লেখ করেছেন।
ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি আপন পুস্তকে উল্লেখ করেন।
معاذ بن زهرة يقال: أبو زهرة: مقبول
অর্থাৎ: মুয়ায বিন যুহরাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু, তিনাকে আবু যুহরাহ ও বলা হয়।আর তিনি গ্রহণযোগ্য বর্ণনাকারী।
তাক্বরীবুত তাহযীব রাবী নং ৬৭৩১
অতএব : মুয়ায বিন যুহরাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু কে মুহাদ্দিসীনে কেরামগণ গ্রহণযোগ্য বলেছেন। উক্ত বর্ণনাকারীকে মাজহুল অপরিচিত বলা চরম পর্যায়ের মূর্খতা।
এ সম্পর্কে আরেকটি সহীহ হাদিস পাওয়া যায়।
যেমন ইমাম ইবনে আবী শাইবা রাহমাতুল্লাহি আলাইহি আপন পুস্তকে আনায়ন করেছেন।
حدثنا محمد بن فضيل ،عن حصين ،عن أبي زهرة: قال: كان النبي صلى الله عليه وسلم إذا صام ثم أفطر قال: اللهم لك صمت و على رزقك أفطرت
অর্থাৎ: হযরত আবু যুহরাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন ইফতার করতেন। তখন পড়তেন, আল্লাহুম্মা লাকা সুমতু ওয়া আলা রিযক্বেকা আফতারতু।
মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, খন্ড - ৬ , পৃষ্ঠা নং ৩২৯- ৩৩০ , হাদীস নং ৯৮৩৭
মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবার তাহক্বীক কারী ইমাম আওয়ামা রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন,
هذا مرسل بإسناد حسن
অর্থাৎ: এই মুরসাল হাদীসের সনদ হাসান।
উক্ত সনদের আরো দুটি শাওয়াহিদ পাওয়া যায়। যেমন ইমাম আওয়ামা রাহমাতুল্লাহি আলাইহি মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবার তাহক্বীক করতে গিয়ে বলেন,
وله شواهد من حديث ابن عباس و من حديث أنس
অর্থাৎ: উক্ত হাদিসের শাওয়াহিদ হিসেবে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস ও হযরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা এর হাদীস পাওয়া যায়।
দুইটি হাদীস নিম্নে পেশ করা হলো:
ইমাম তাবারানী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি আপন পুস্তকে হাদীস আনায়ন করেছেন।
حدثنا محمد بن عبد الله الحضرمي ثنا يوسف بن قيس البغدادي ،ثنا عبد الملك بن هارون بن عنترة عن أبيه عن جده عن ابن عباس قال: كان النبي صلى الله عليه وسلم إذا أفطر قال: اللهم لك صمت و على رزقك أفطرت فتقبل مني إنك أنت السميع العليم
অর্থাৎ: হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন ইফতার করতেন, তখন তিনি বলতেন, আল্লাহুম্মা লাকা সুমতু ওয়া আলা রিযক্বেকা আফতারতু,ফাতাক্বাব্বাল মিন্নী ইন্নাকা আনতাস সামীউল আলীম।
আল মুজামুল কাবীর -খন্ড ১২, পৃষ্ঠা নং ১৪৬, হাদীস নং ১২৭২০
ইমাম তাবারানী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি আপন পুস্তকে উল্লেখ করেন।
حدثنا محمد بن ابراهيم: ثنا إسماعيل بن عمرو البجلي : نا داود بن الزبرقان: نا شعبة عن ثابت البناني ، عن أنس بن مالك قال كان النبي صلى الله عليه وسلم إذا أفطر قال: بسم الله ، اللهم لك صمت و على رزقك أفطرت ،
অর্থাৎ: হযরত আনাস বিন মালিক রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন ইফতার করতেন। তখন তিনি বলতেন,বিসমিল্লাহ আল্লাহুম্মা লাকা সুমতু ওয়া আলা রিযক্বেকা আফতারতু।
আল মুজামুল আউসাত - খন্ড,৭ পৃষ্ঠা নং ২৯৮ , হাদীস নং ৭৫৪৯
অতএব: হযরত আবু যুহরাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু এর হাদীসের পক্ষে দুইটি বর্ণনা শাওয়াহিদ হিসেবে থাকার কারণে হাদীসটি আরো শক্তিশালী হয়ে যায়।
কেননা, মুরসাল হাদীসের পক্ষে দ্বঈফ সনদের বর্ণনাও যদি শাওয়াহিদ হিসেবে পাওয়া যায়। তাহলে মুহাদ্দিসগণ এর দৃষ্টিতে হাদীসটি বিশুদ্ধ হিসেবে গণ্য হয়। এই এই উসুলটি আহলে হাদীস আলিমগণ ও গ্রহণ করেছেন।
যেমন মাওলানা রাইস নাদাবী আপন পুস্তকে উল্লেখ করেন।
یہ معلوم ہے کہ مرسل حدیث احناف و مالکیہ کے نزدیک مطلقاً حجت ہے اور دوسرے اہل علم کے نزدیک بعض شرائط کے ساتھ حجت ہے جن میں سے ایک یہ ہے کہ وہ دوسری متصل سند سے خواہ ضعیف ہو مروی ہو
অর্থাৎ: আমরা অবগত,যে মুরসাল হাদীস হানাফী ও মালেকীগণের নিকট কোন দ্বিধাবোধ ছাড়াই গ্রহণযোগ্য। আর অন্যান্য ইমামগণের নিকট কিছু শর্ত সাপেক্ষে গ্রহণযোগ্য, তার মধ্যে একটি শর্ত হলো য,( মুরসালের ) পক্ষে দ্বিতীয় মুত্তসিল সনদের যদিও দ্বঈফ বর্ণনা পাওয়া যায়।
নামাযে জানাযা আওর উসকে মাসায়েল - পৃষ্ঠা নং ৪৬
অতএব: সুনানে আবু দাউদ ও মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবার বর্ণনার পক্ষে দুইটি মুতাবেয়াত পাওয়া যায়।
সুতরাং: লা- মাযহাবীদের উসুল অনুযায় উক্ত হাদীসটি সহীহ ও গ্রহণযোগ্য।
মুহাদ্দিসীনে কেরাম এর দৃষ্টিতে ইফতারের দোয়া:
ইমাম ইবনে ইউসুফ আশ শেরাযী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি ( ইন্তেকাল - ৪৭৬ হিজরী) তিনি আপন পুস্তকে উল্লেখ করেন।
والمستحب أن يقول عند إفطاره ،اللهم لك صمت و على رزقك أفطرت
অর্থাৎ: ইফতারের সময় ( দোয়া হিসেবে) আল্লাহুম্মা লাকা সুমতু ওয়া আলা রিযক্বেকা আফতারতু পাঠ করা মুস্তাহাব।
আল মুহাযযাব খন্ড,১ পৃষ্ঠা নং ৩৪৩
হুজ্জাতুল ইসলাম ইমাম গাজ্জালী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি ( ইন্তেকাল - ৫০৫ হিজরী) তিনি বলেন।
مستحب: و يقول عند ذلك: اللهم لك
صمت و على رزقك أفطرت
অর্থাৎ: ইফতারের সময় আল্লাহুম্মা লাকা সুমতু ওয়া আলা রিযক্বেকা আফতারতু পাঠ করা মুস্তাহাব।
আল ওয়াসীতু ফিল মাযহাব খন্ড,২ পৃষ্ঠা নং ৫৩৬
ইমাম বাগাবী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি ( ইন্তেকাল - ৫১৬ হিজরী) তিনি আপন পুস্তকে উল্লেখ করেন।
يستحب أن يقول عند الفطر ماروي عن معاذ : قال: كان رسول الله صلى الله عليه وسلم إذا أفطر قال: اللهم لك صمت و على رزقك أفطرت
অর্থাৎ: ইফতারের সময় দোয়া পাঠ করা মুস্তাহাব , কেননা, হযরত মুয়ায বিন যুহরাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন ইফতার করতেন। তখন আল্লাহুম্মা লাকা সুমতু ওয়া আলা রিযক্বেকা আফতারতু পাঠ করতেন।
আত তাহযীব খন্ড,৩ পৃষ্ঠা নং ১৮৩
ইমাম বায়হাক্বী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি আপন পুস্তক ফাযায়েলুল আউকাত পৃষ্ঠা নং ৮০ এর মধ্যে অনুচ্ছেদ বেধেছেন।
باب استحباب الدعاء عند الفطر
অর্থাৎ: ইফতারের সময় দোয়া মুস্তাহাব হওয়ার অধ্যায়।তার পর তিনি উক্ত দোয়া খানা উল্লেখ করেছেন।
ইমাম ইবনে ক্বুদামা মাক্বদেসী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি ( ইন্তেকাল - ৬৬০ হিজরী) তিনি বলেন।
و يستحب ،،، و أن يقول عند فطره اللهم لك صمت و على رزقك أفطرت ،سبحانك اللهم و بحمدك اللهم تقبل مني إنك أنت السميع العليم
অর্থাৎ: ইফতারের সময় আল্লাহুম্মা লাকা সুমতু ওয়া আলা রিযক্বেকা আফতারতু,সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বেহামদেকা, আল্লাহুম্মা তাকাব্বাল মিন্নী ইন্নাকা আনতাস সামীউল আলীম পাঠ করা মুস্তাহাব।
আল মুকনি পৃষ্ঠা নং ১০৫
ইমাম নাবাবী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি আপন পুস্তকে লিপিবদ্ধ করেন।
يستحب أن يدعو عند إفطاره: اللهم لك صمت و على رزقك أفطرت
অর্থাৎ: ইফতারের সময় দোয়া ( হিসেবে) আল্লাহুম্মা লাকা সুমতু ওয়া আলা রিযক্বেকা আফতারতু পাঠ করা মুস্তাহাব।
আল মাজমুউ শারহুল মুহাযযাব খন্ড,৬ পৃষ্ঠা নং ৪০৮
অতএব: উল্লেখিত আলোচনা থেকে প্রমাণিত হলো,যে মুহাদ্দিসীনে কেরাম এর দৃষ্টিতে ইফতারের সময় উক্ত দোয়া পাঠ করা শুধু জায়েয নয় বরং মুস্তাহাব।
লা- মাযহাবী আলিমদের দৃষ্টিতে ইফতারের দোয়া:
শাইখ উসাইমীন কে প্রশ্ন করা হলো,
سوال: هل هناك دعاء مأثور عند الإفطار ؟
অর্থাৎ: ইফতারের কি কোন দোয়া প্রমাণিত আছে?
الجواب: والدعاء الماثور: اللهم لك صمت و على رزقك أفطرت ، و منه أيضا قول النبي صلى الله عليه وسلم حين أفطر قال: ذهب الظماء ،وابتلت العروق و ثبت الأجر إن شاء الله
অর্থাৎ: বিখ্যাত দোয়া ( ইফতারের সময়) আল্লাহুম্মা লাকা সুমতু ওয়া আলা রিযক্বেকা আফতারতু,আর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর অন্য একটি উক্তি পাওয়া যায়।যে তিনি যখন ইফতার করতেন, তখন যাহাবায যামাউ ওয়াব তাল্লাতিল উরুক্বু ওয়া সাবাতাল আজরু ইন শা আল্লাহ পাঠ করতেন।
ফাতাওয়া আরকানুল ইসলাম - পৃষ্ঠা নং ৪৮৬
সাউদি আরবের আলিম স্বলেহ বিন ফাউযান কে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলো:
سوال: ما هوا الدعاء الماثور عن النبي صلى الله عليه وسلم عند الإفطار و عند السحور ؟
অর্থাৎ: ইফতার ও সেহরির সময় নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে কি কোনো বিখ্যাত দোয়া প্রমাণিত আছে ?
الجواب: قد ورد عن النبي صلى الله عليه وسلم انه كان إذا أفطر يقول: ذهب الظماء وابتلت العروق و ثبت الأجر إن شاء الله ، و ورد عن بعض الصحابة أنه إذا أفطر قال: اللهم لك صمت و على رزقك أفطرت فاغفر لي إنك أنت الغفور الرحيم
অর্থাৎ: নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণিত হয়েছে, যে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন ইফতার করতেন। তখন বলতেন,যাহাবায যামাউ ওয়াব তাল্লাতিল উরুক্বু ওয়া সাবাতাল আজরু ইন শা আল্লাহ, আর কিছু সাহাবায়ে কেরাম থেকে বর্ণিত হয়েছে,যে যখন তিনারা ইফতার করতেন। তখন আল্লাহুম্মা লাকা সুমতু ওয়া আলা রিযক্বেকা আফতারতু ফাগফিরলী ইন্নাকা আনতাল গাফুরুর রাহীম
মাজমুয়ায়ে ফাতাওয়া - খন্ড,২ পৃষ্ঠা নং ৩৯৫
আহলে হাদীসদের মাওলানা আব্দুল্লাহ রোপড়ী কে প্রশ্ন করা হলো,যে রোজার নিয়ত সম্পর্কে তো উত্তরে তিনি বলেন,
اور افطار کے وقت یہ لفظ آۓ ہیں - اللهم لك صمت و على رزقك أفطرت ،
অর্থাৎ: ইফতারের সময় এই দোয়া, আল্লাহুম্মা লাকা সুমতু ওয়া আলা রিযক্বেকা আফতারতু বর্ণিত হয়েছে।
ফাতাওয়া আহলে হাদীস - খন্ড,২ পৃষ্ঠা নং ৫৫৩
অনুরূপ ফাতাওয়া উল্লেখ করেছেন।
মাওলানা আবুল হাসানাত সাঈদী তার ফাতাওয়া উলামায়ে আহলে হাদীস - খন্ড,৬ পৃষ্ঠা নং ৯৪
অতএব : আহলে হাদীস আলিমগণও ইফতারের সময় উক্ত দোয়া পাঠ করা জায়েয বলে ফাতাওয়া দিয়েছে।
সুতরাং: এখন উক্ত দোয়া কে না জায়েয ও বিদআত বলা মুর্খামি ছাড়া আর কিছু নয়।
আল্লাহপাক আমাদের সকলকে সঠিক বুঝ দান করুক। আমিন সুম্মা আমীন
দোয়াপ্রার্থী : মাওলানা মানিরুল ইসলাম,কালিয়াচক,মালদা
শিক্ষক: মাদ্রাসা গাওসিয়া ইসলামিয়া আরাবিয়া মুর্শিদাবাদ
Comments -