ইসলামী ভিডিও প্রসঙ্গে উলামায়ে বাঙ্গালের ফায়সালা
❤️🩹*ইসলামী ভিডিও প্রসঙ্গে*❤️🩹
🥏উলামায়ে বাঙ্গালের ফায়সালা🥏
ইসলামী ভিডিও নিয়ে কেউ বিভ্রান্ত হবেন না, কাউকে বিভ্রান্ত করবেন না:
___________
কয়েকমাস ধরে ইসলামী ভিডিও কে কেন্দ্র করে পশ্চিমবঙ্গের কিছু আলিমগণের মধ্যে মতপার্থক্য দেখা দিয়েছিল, ইসলামী ভিডিও করা যাবে কি-না? উক্ত প্রসঙ্গে কিছু আলিমগণ বলছিলেন, ইসলামী ভিডিও করা ও দেখা জায়েয আছে। পক্ষান্তরে কিছু আলিমগণের বক্তব্য ছিল, ভিডিও করা ও দেখা সম্পুর্ণরুপে নাজায়েয ও হারাম এবং যে ভিডিওকে জায়েয মনে করবে সে গুমরাহ।
উকূ প্রসঙ্গে বেশি কাঁদা ছোড়াছুড়ি দেখা দিলে পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বশীল উলামায়ে কেরাম ও মুফতীয়ানে এযাম যেমন মুনাযিরে বাঙাল হযরত মুফতী জুবায়ের হুসাইন মুজাদ্দেদী, ফাকীহে বাঙাল মুফতী আলীমুদ্দীন মানজারী জঙ্গিপুরী ও মুফতী ফাযলুর রাহমান মিসবাহী ০৮/০৩/ ২০২৫ রোজ- শনিবার, মুর্শিদাবাদ জেলার অন্তর্গত ভগবানগোলা থানার ঐতিহ্যবাহী মাদ্রাসা নশীপুর ফুরকানিয়া -এ একটি সমাধান সভার আয়োজন করেন। উক্ত সভায় পশ্চিমবঙ্গের শীর্ষস্থানীয় মুফতীয়ানে কেরাম ও উলামায়ে এযাম কে আহবান করা হয়।
এবং ফায়সাল হিসাবে মুনাযিরে আজমে হিন্দ, খালীফায়ে মুফতীয়ে আজমে হিন্দ ফাক্বীহুন নাফস হযরত আল্লামা মুফতী মুতিউর রাহমান মুযতার রেজবী সাহেবকে আহ্বান করা হয়।
উক্ত সভায় আলোচনা ও পর্যালোচনার পর সর্বসম্মতিক্রমে ফায়সালা প্রদান করা হয় যে,
"ভিডিও সংক্রান্ত মাসআলাটি প্রসঙ্গে আহলে সুন্নাত এর মুহাক্কিকগণে গ্রহনযোগ্য তিনটি মত রয়েছে। যথা
(১) ইসলামী ভিডিও করা জায়েয। (কেননা, মোবাইল ও টিভি ইত্যাদির মধ্যে যে ছবি দেখা যায় সেটা বাস্তবে কোন ছবি-ই নয়।)
(২) ছবি ও ভিডিও করা নাজায়েয ও হারাম। তবে হ্যাঁ, জরুরত, হাজত ও মাসলেহাতে দীনের কারনে ও ইসলামের প্রচারের উদ্দেশ্যে ভিডিও করা জায়েয ও বৈধ। কিন্তু, অপ্রয়োজনে ছবি তোলা নিষেধ।
(৩) ছবি ও ভিডিও করা সম্পূর্ণরূপে নাজায়েয ও হারাম। হ্যাঁ, প্রয়োজনে ছবি করা যাবে যেমন- ভোটার কার্ড, আঁধার কার্ড পাসপোর্ট ইত্যাদির জন্য। কিন্ত ইসলামের প্রচারের উদ্দেশ্যে ভিডিও করা যাবে না।
যেহেতু এই মাসআলাটি নিয়ে উলামায়ে আহলে সুন্নাত ওয়া জামা'আত -এর মধ্যেই মতভেদ রয়েছে, "অতএব যে যার উপর আমল করতে পারে। নিজ মতের উপর আমল করবে; কিন্ত অপরকে গুমরাহ ও ফাসিক বলবে না। একে অপরের পেছনে নামায হয়ে যাবে। একে অপরকে সালাম- কালাম করবে। কেউ কারো বিরুদ্ধে কোনো অসম্মানসূচক শব্দ প্রয়োগ করবে না। (কেননা, তিনটি মত অবলম্বন কারির মধ্যে) সকলেই সুন্নী, মাসলাকে আলা হাযরাত তথা মাসলাকে আহলে সুন্নাত ওয়া জামা'আতের অনুসারী।"
উক্ত ফায়সালা সভায় ফাকীহুন নাফস মুফতী মুতিউর রাহমান মুযতার রেজবী সাহেব সহ আরো শতাধিক উলামায়ে কেরাম ও মুফতীয়ানে এযাম উপস্থিত ছিলেন।
তন্মধ্যে বিশেষ কয়েকজনের নাম উল্লেখ করা হল-
👉হযরত মুফতী জুবায়ের হুসাইন রেজবী মুজাদ্দেদী, (ভগবানগোলা,মুর্শিদাবাদ)
👉 হযরত মুফতী আলিমুদ্দিন রেজবী সাহেব (জঙ্গিপুর)
👉হযরত মুফতী নাঈমুদ্দিন রেজবী মানজারী সাহেব, (ভগবানগোলা )
👉 হযরত মুফতী আমজাদ হুসাইন সিমনানী সাহেব, (দঃ দিনাজপুর )
👉 হযরত মুফতী সৈয়্যেদ জুলফিকার বারকাতী সাহেব (সাদার:- জামিয়া নূরিয়া শ্যামপুর, রায়গঞ্জ )
👉হযরত মুফতী ফাজলুর রাহমান মিসবাহী সাহেব, (ঝাড়খণ্ড)
👉 হযরত মুফতী আব্দুল আযীয কালীমী সাহেব, (মানিকচক, মালদা)
👉 হযরত মুফতী আলী হুসাইন ক্বাদেরী সাহেব, (ইসলামপুর,মুর্শিদাবাদ)
👉হযরত মুফতী গুলজার আলী মিসবাহী সাহেব, (হেমতাবাদ, উঃ দিনাজপুর)
👉হযরত মুফতী আলমগীর হুসাইন মুজাদ্দেদী সাহেব, (ইসলামপুর,মুর্শিদাবাদ)
👉হযরত মুফতী শামসুদ্দিন মিসবাহী সাহেব, (বিরভুম)
👉 হযরত মুফতী জাহাঙ্গীর খান রেজভী সাহেব (নবকান্তপুর, জঙ্গিপুর)
👉হযরত মুফতী রাহবার জামেয়ী সিমনানী সাহেব, (উঃ দিনাজপুর)
👉হযরত মুফতী সাহিমুদ্দিন মিসবাহী আজহারী সাহেব, (জরুর, উমারপুর)
👉হযরত মুফতী গোলাম সারওয়ার সিমনানী, (কাটিহার, বিহার)
👉 হযরত মুফতী আখতার হুসাইন নাঈমী সাহেব, (মোথাবাড়ী, মালদা)
👉হযরত মুফতী জাহাঙ্গীর আলাম রেজবী সাহেব, (সাহেবগঞ্জ, ঝাড়খণ্ড)
👉হযরত মুফতী নুর আলম কাদরী সাহেব, (মানিকচক, মালদা )
👉হযরত মুফতী আবু সুফিয়ান মানজারী সাহেব (রানিনগর, মুর্শিদাবাদ)
👉হযরত মুফতী মানজার আলাম জামেয়ী সাহেব (দাসপাড়া, উঃ দিনাজপুর)
👉হযরত মুফতী আবু রাইহান মানজারী সাহেব (রানিনগর, মুর্শিদাবাদ)
👉 হযরত মুফতী ইব্রাহিম রেজা রেজবী সাহেব (রানিতলা, মুর্শিদাবাদ )
👉 হযরত মুফতী আজমীর হুসাইন রেজভী সাহেব (ভরতপুর, মুর্শিদাবাদ)
👉হযরত মুফতী তামজীদ হুসাইন রেজভী সাহেব (ভরতপুর, মুর্শিদাবাদ)
👉
এছাড়া আরো বহু আলিম ও মুফতী সাহেবগণ উপস্থিত ছিলেন।
সুতরাং এই মাসআলাটি নিয়ে কেউ বিভ্রান্ত হবেন না। কেউ কাউকে বিভ্রান্ত করবেন না। কেননা, ১-যারা জায়েয বলছেন তাদের নিকটেও নির্ভরযোগ্য দলীল বিদ্যমান। ২-যারা প্রয়োজনে জায়েয বলছেন তাদের নিকটেও নির্ভরযোগ্য দলীল বিদ্যমান। ৩-আর যারা নাজায়েয বলছেন তাদের নিকটেও নির্ভরযোগ্য দলীল বিদ্যমান। সকলেই আহলে সুন্নাত ওয়া জামা'আত তথা মসলাকে আলা হযরত -এর অনুসারী। উলামায়ে আহলে সুন্নাতের কর্তব্য হল মিলেমিশে আহলে সুন্নাত ওয়া জামা'আত এর প্রচার ও প্রসার করা এবং বাতিল পন্থীদের সাথে লড়াই করা। আল্লাহ তাআলা আমাদের সকলকে বুঝার তৌফিক দান করুক এবং সবাইকে আহলে সুন্নাত ওয়া জামা'আত -এর খিদমত করার তৌফিক দান করুক, আমীন।
বিশেষ দ্রষ্টব্য:- যারা এ মাসআলাটি নিয়ে উলামায়ে আহলে সুন্নাত ও সাধারণ সুন্নী মুসলমানদের মধ্যে ফাটল সৃষ্টি করতে চাইছে তাদের কথায় কান দিবেন না।
Comments -