KeyOfIslam
Welcome To KeyOfIslam.com. KeyOfIslam is the platform to spread love and brotherhood among all people through the light of Prophet Mohammad(peace be upon him), the Final Messanger of Allah. Here you will get informations with precision.
Individual Articles
খাদ্যদ্রব্যের মূল্য ও টাকা দিয়ে ফিতরা আদায় করার বৈধ কিনা? Mufti Abdul Aziz kalimi
🌹 *টাকা দিয়ে ফিতরা আদায় করার বিধান*🌹 প্রশ্নঃ মূল্য (টাকা) দিয়ে ফিতরা আদায় করলে কি আদায় হবে নাকি খাদ্যদ্রব্যই দিতে হবে? উত্তরঃ এটা পরিষ্কার হওয়া উচিত যে, খাদ্যের পরিবর্তে মূল্য (টাকা)আদায় করা সাদকায়ে ফিতর ব্যাপারে ইমাম মালিক, ইমাম শাফেয়ী, ইমাম আহমদ ও ইমাম ইসহাক বিন রাহাবীয়া (রহমাতুল্লাহি আলাইহিম)বলেন, যে খাদ্যের পরিবর্তে তার মূল্য (টাকা) দিয়ে সাদকায়ে ফিতর আদায় করা জায়েয নয়। ইনারা হাদিসের প্রকাশ্য শব্দের দিকে লক্ষ্য রেখে এই মত ব্যক্ত করেছেন। তাঁরা বলেন যে, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খেজুর কিসমিস গম জব মোনাক্কা ইত্যাদি এই জিনিসগুলোকে সাদকায়ে ফিতর হিসেবে হাদিসে উল্লেখ করেছেন, তাই এই আইটেমের মাধ্যমেই সাদকায়ে ফিতর দিতে হবে, এগুলোর মূল্য পরিশোধ করলে সাদকায়ে ফিতর আদায় হবে না। . যদিও ইমাম আবু হানিফা এবং সুফিয়ান সাওরী এবং ইমাম বুখারী, (রাহমাতুল্লাহি আলাইহিম) বলেন যে, মাল-এর পরিবর্তে সাদাকায়ে ফিতর প্রদান করা জায়েজ। 🌷হানাফীদের দলীল সমূহ। 1. দলীল। হানাফীগন বলেন যে সাদকায়ে ফিতরের মূল উদ্দেশ্য হ'ল ঈদুল ফিতরের দিন ফকিরদের সুবিধা করে দেওয়া এবং কারও সামনে হাত প্রসারিত করা থেকে মুক্তি দেওয়া, যেমন নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: «أَغْنُوهُمْ عَنْ الْمَسْأَلَةِ فِي مِثْلِ هَذَا الْيَوْمِ» এই দিনে (ঈদের দিনে) গরিব মিসকিনদের-কে কারো সামনে হাত প্রসারিত করা থেকে মুক্ত করে দাও!(বাদায়েউস সানায়ে খণ্ড নম্বর 2 পৃষ্ঠা নম্বর 273) উপস্থিত যুগে উক্ত কর্মটি মূল্যের মাধ্যমে যতটা সহজ খাদ্যদ্রব্যের মাধ্যমে ততটা সহজ নয়, আমরাই নিজে ছোটবেলা খাদ্যদ্রব্য দিয়ে আইসক্রিম ইত্যাদি নিয়েছি খাদ্যের পরিবর্তে তারা দিয়ে দিতেন কিন্তু এখন খাদ্যদ্রব্যের পরিবর্তে কোন জিনিসই দেওয়া নেওয়া হয় না। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যুগে সেটা প্রচলন ছিল তাই সেটাই বলেছেন। যেমন হাদিস পাকে আছে কর্মের বদলে খেজুর আদান প্রদান হয়েছে। আমাদের যুগে সেটা প্রচলন নেই তাই যেটা প্রচলন তার মাধ্যমে যদি আমরা ফিতরা আদায় করি এটা হাদিসেরই উদ্দেশ্য পালন হবে হাদিসের ব্যতিক্রম হবে না। কোন হাদিসেই এটা লিখা নেই যে খেজুর গম মোনাক্কা ইত্যাদি খাদ্যদ্রব্যই দিতে হবে তার মূল্য দিলে হবে না। তিনি শুধু পরিমাণের জন্য উক্ত খাদ্যদ্রব্যের নাম গুলি সম্বোধন করেছিলেন। 2. দলীল। অনুরূপভাবে তাবেয়ীনদের থেকে খাদ্যশস্যের পরিবর্তে মূল্যসহ সাদকায়ে ফিতর প্রদানের দলীল পাওয়া যায়। روى ابن أبي شيبة عن عون قال: سمعت كتاب عمر بن عبد العزيز يقرأ إلى عدي بالبصرة - وعدي هو الوالي -: يؤخذ من أهل الديوان من أعطياتهم من كل إنسان نصف درهم (مصنف ابن أبي شيبة، ج:2، ص: 398، ط:مكتبة الرشد، رياض ) হযরত ইবনে আবি শায়বা হযরত আউন থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেছেন: আমি বসরায় আদী-কে খলিফা উমর ইবনে আবদুল আজিজের লিখা পত্র শুনেছি - আদী বাসরার গভর্নর ছিলেন। প্রত্যেকটা ব্যক্তির কাছ থেকে অর্ধেক দিরহাম (রৌপ মুদ্রা) সঞ্চয় করবেন। ( ইবনে আবি শাইবা, খণ্ড: 2, পৃষ্ঠা: 398, আল-রশিদ লাইব্রেরি, রিয়াদ) 3, দলীল। وعن الحسن قال: لا بأس أن تعطي الدراهم في صدقة الفطر. (مصنف ابن أبي شيبة، ج:2، ص: 398، ط: مكتبة الرشد، رياض) (ইবনে আবি শায়বাহ, ভলিউম: 2, পৃ: 398, আল-রশিদ লাইব্রেরি, রিয়াদ) অনুবাদ: হযরত হাসান বাসরী, রহমাতুল্লাহি আলাইহি, বলেছেন যে সাদকায়ে ফিতরে দিরহাম(টাকা) (খাদ্য সামগ্রীর পরিবর্তে) দেওয়া কোন ক্ষতি নেই। 4. দলীল। وعن أبي إسحاق قال: أدركتهم وهم يؤدون في صدقة رمضان الدراهم بقيمة الطعام. (مصنف ابن أبي شيبة، ج:2، ص: 398، ط: مكتبة الرشد، رياض) ( ইবনে আবি শায়বাহ, ভলিউম: 2, পৃ: 398, আল-রশিদ লাইব্রেরি, রিয়ায) অনুবাদ: হযরত আবূ ইসহাক রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, আমি তাবেয়ীদের দেখেছি তাঁরা সাদকায়ে ফিতরে খাদ্যশস্যের মূল্য পরিশোধ করতেন। সুতরাং এসব নিদর্শন থেকে জানা গেল যে, সাদকায়ে ফিতরে নগদ (টাকা ইত্যাদি) দেওয়া জায়েয। 5. দলীল। যদি আমরা ন্যায্যতার দৃষ্টিকোণ থেকে দেখি এবং বিবেচনা করি তাহলে দেখা যায় যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে এবং তার পরে সাহাবায়ে কেরামের আমলে শুধু খাবারই ছিল। দানা (খাদ্যদ্রব্য) দাম হিসেবে ব্যবহার করা হতো, তারা নিজেদের মধ্যে খাদ্যশস্য বিনিময় করতো। কখনো শস্য-শস্যের বিনিময় হতো, কখনো শস্যের বিনিময় হতো সোনা-রূপার সাথে, আর সে সময় যে কোনো পণ্য নিয়ে বাজারে যেত, সে তার সঠিক দাম পেত এবং বিনিময়ে উপযুক্ত পরিমাণ জিনিস পাওয়া যেত, কিন্তু আমাদের সময়ে যেহেতু খাদ্যশস্যের আদান-প্রদান প্রায় শেষ হয়ে গেছে এবং টাকায় সবকিছু বিক্রি ও কেনাকাটা করা হচ্ছে, সেহেতু আজ যদি আপনি কোনো গরীবকে সাদকায়ে ফিতরে খাবার (খাদ্যদ্রব্য) দেন এবং সে যদি তা বিক্রি করতে বাজারে যায়, সে সেই খাদ্য দ্রব্যের সর্বনিম্ন মূল্য পায়। কারণ যে কিনবে সে তো পাইকারি দরে কিনবে। তাই আপনি যদি সেই খাদ্যদ্রব্য না দিয়ে যদি তার সর্বোত্তম মূল্য প্রদান করেন, যাতে সে জীবনের প্রয়োজন মাফিক অন্যান্য চাহিদা পূরণ করতে পারে, তাহলে এতে দোষের কী আছে? এটা তো আরো উত্তম কর্ম হলো। এ কারণেই সময়ের প্রয়োজনে এখন প্রায় সব মাযহাবই একমত যে, আধুনিক যুগে শস্য ও পণ্যের বিনিময়ে মূল্য দেওয়া যেতে পারে। যেমন শাফেয়ী মতের বিশিষ্ট আলেমগণ মত ব্যক্ত করেছেন اصحاب فقہ المنھجی (مجموعہ شوافع مولفین) نے احناف کے مسئلہ پر عمل کرتے ہوئے قیمت ادا کرنے کی اجازت دی ہے۔ (ج:1،ص:230، ط: دار القلم، دمشق) ফিকহ আল-মানহাজির সহচর্যগণ (সমগ্র শাফেয়ী লেখক) হানাফীদের উক্ত মতকে প্রাধান্য দিয়ে মূল্য পরিশোধের অনুমতি দিয়েছেন। (খন্ড 1, পৃ: 230, দারুল ক্বালাম, দামেস্ক) আরব বিশ্বের একজন বিখ্যাত গবেষক ডক্টর ইউসুফ কারাযাবী এক প্রশ্নের জবাবে বলেন: যে যদি কেউ বর্তমান এবং বিদ্যমান সময়ে ন্যায়বিচারের কথা চিন্তা করে সে জানবে যে, খাদ্যের মাধ্যমে সাদকায়ে ফিতর প্রদান করা সম্ভব হবে শুধুমাত্র একটি সীমিত সমাজের মধ্যেই, যেখানে প্রচুর খাদ্য রয়েছে এবং সেখানে দরিদ্র মানুষও প্রচুর রয়েছে যারা খাদ্যশস্যের অভাবী এবং এসবের মাধ্যমে উপকারিতা অর্জন করে থাকে। কিন্তু বিশাল ঘন জনসংখ্যায়, খাদ্যশস্যের অস্তিত্ব এতই বিরল যে সাদকায়ে ফিতর প্রদানকারী ব্যক্তির পক্ষে এটি খুঁজে পাওয়া কিছুটা কঠিন এবং দরিদ্র ব্যক্তির জন্যও এটা কষ্টকর হয়ে পড়বে। কারণ এটি পিষে, তারপর ময়দা তৈরি এবং তারপর তার রুটি সেঁকতে অসুবিধা হবে। অতএব, যে ব্যক্তি ন্যায়বিচারের দিকে তাকাবে তার কোন সন্দেহ থাকবে না যে, এই পরিস্থিতিতে সাদকায়ে ফিতরে খাদ্যশস্যের পরিবর্তে মূল্য পরিশোধ করা উত্তম। ডঃ ইউসুফ কারাযাবী "ফিক্বহুয যাকাত" গ্রন্থে আরো লিখেছেন যে চিন্তা করার পর আমার কাছে এটা পরিষ্কার হয়ে গেল যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুটি কারণে খাদ্যশস্যের মাধ্যমে সাদকায়ে ফিতর আদায় করার নির্দেশ দিয়েছেন: প্রথম কারণ হলো, মানুষের জন্য খাদ্যশস্য দিয়ে সাদকায়ে ফিতর আদায় করা সহজ ছিল। দ্বিতীয় কারণ হল মুদ্রার মূল্য পরিবর্তিত হয় এবং এর ক্রয়মূল্য সময়ে সময়ে বাড়তে থাকে এবং এর বিপরীতে, এক 'শা' পরিমাণ শস্য মানুষের প্রয়োজনীয়তা-কে বেশি পূরণ করে (এবং এর মূল্য অবমূল্যায়ন হয় না)। (তাই যেমন সে যুগে দাতার জন্য এই খাদ্যশস্যের মাধ্যমে সাদকায়ে ফিতর আদায় করা সহজ ছিল এবং গ্রহীতার জন্য এটি অধিকতর উপকারী ছিল)। (তাই আজ খাদ্যশস্যের পরিবর্তে মূল্যের মাধ্যমে সাদকায়ে ফিতর আদায় করা সহজ। দাতার পক্ষেও আদায় করা সহজ এবং প্রাপ্যকের জন্য আরও উপকারী। (ফিক্বহুয যাকাত, খণ্ড: 2, পৃষ্ঠা: 449, আল-রিসালাহ আল-আ'মালী) প্রাক্তন শায়খ "জামে আযহার মিশর" মাহমুদ শালতুতও মূল্যের মাধ্যমে সাদকায়ে ফিতর প্রদান করা জায়েয সম্পর্কে একটি ফতোয়া জারি করেছেন। তিনি বলেছেন যে মূল্য (টাকা)-র মাধ্যমে সাদকায়ে ফিতর প্রদান করাই যথেষ্ট, কারণ কখনও কখনও মূল্য ফকিরের জন্য আরও আরামদায়ক এবং উপকারী হয় এবং এতে ফকিরের বিভিন্ন প্রয়োজন মেটানোর সুবিধা ও হয়ে থাকে। যা ফকির নিজেই খুব ভালভাবে জানেন। এবং খাদ্যদ্রব্য পেলে কখনই কখনই পণ্য বিনিময় করার সুযোগ পান না। তাই প্রয়োজন দূর করার সাথে দামের অনেক সম্পর্ক রয়েছে এবং আমি (শায়েখ আযহার) এটিকে আমার জন্য ভাল এবং পছন্দ মনে করি যে আমি যখন শহরে থাকব তখন মূল্য (টাকা) দিয়ে সদকায়ে ফিতর আদায় করব। আর আমি যদি গ্রামে থাকি তবে গম, কিসমিস, খেজুর ও চাল ইত্যাদি দিয়ে সাদকায়ে ফিতর আদায় করব। গায়ের মুকাল্লীদ আলেম ও মুহাদ্দিস, শায়েখ হাফিজ জুবায়ের আলী জাঈ, তাবেয়ীনদের রেওয়ায়েত উদ্ধৃত করার পর লিখেছেন: "এই নিদর্শন অনুসারে, সাদকায়ে ফিতরে মূল্য (টাকা ইত্যাদি) দেওয়া জায়েয, এবং এই ন্যায্যতা শুধুমাত্র তাদের জন্য বিশেষ বিবেচনা করা উচিত যারা ইউরোপে (যেমন গ্রেট ব্রিটেন) এবং আমেরিকা ইত্যাদিতে বসবাস করেন, দরিদ্র দেশগুলি-তে (যেমন পাকিস্তান, (ভারতে)) তাদের দরিদ্র আত্মীয়দের সাথে সহযোগিতা করা উচিত এবং মিসকিন দের হক দেওয়া উচিত।(আর এটা টাকার মাধ্যমে সম্ভব) অন্যথায় গম, আটা এবং খেজুরের মতো পণ্য দিয়ে সাদকায়ে ফিতর দেওয়া ভাল এবং এটিই আমরা অনুশীলন করি পাকিস্তানে." (ফাতাওয়া ইলমিয়া আল-মারুফ, তাউযীহুল আহকাম, খণ্ড: 3, পৃষ্ঠা: 154) এ সমস্ত বিশদ বিবরণ থেকে এটা স্পষ্ট যে, হানাফীদের মত বর্তমান সময়ে অনুসরণ করা সহজ এবং এটাই হাদিসের মূল উদ্দেশ্য মাফিক। গরীবদের অবস্থার ক্ষেত্রেও এতে সুবিধা রয়েছে এবং সদকায়ে ফিতর আদায় করার উদ্দেশ্যই গরিব মিসকিনদের সুবিধা করে দেওয়া। যেমন নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- «أَغْنُوهُمْ عَنْ الْمَسْأَلَةِ فِي مِثْلِ هَذَا الْيَوْمِ» এই দিনে (ঈদের দিনে) গরিব মিসকিনদের কে কারো সামনে হাত প্রসারিত করা থেকে মুক্ত করে দাও!(বাদায়েউস সানায়ে খণ্ড নম্বর ২ পৃষ্ঠা নম্বর 273) আর এটা উপস্থিত যুগে মূল্য দিয়ে যতটা সম্ভব খাদ্য দ্রব্য দিয়ে ততটা সম্ভবপর হতে পারে না। তাই খাদ্যের পরিবর্তে মূল্য (টাকা) সাদকায়ে ফিতর প্রদান করা। না শুধুমাত্র অনুমোদিত, বরং উত্তম। ইতি (মুফতী) আব্দুল আজিজ কালিমী মানিকচক, মালদা। শিক্ষকঃ এম.জি.এফ. মদিনাতুল উলুম খালতিপুর কালিয়াচক। ইমামঃ পাঁচতলা জামে মসজিদ কালিয়াচক, মালদা, পশ্চিমবঙ্গ ভারত। 13/04/2023

Comments -

Posted On: 2023-04-13
মাশাআল্লাহ। খুব সুন্দর পোস্ট।
Most Read Articles