নবী করীম ﷺ কে পেয়ে খুশি ও আনন্দ প্রকাশ করার প্রমাণাদি, মিলাদুন্নবীর খুশি প্রকাশ করার প্রমাণাদি,
🏵️নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে পেয়ে খুশি ও আনন্দ প্রকাশ করা🏵️
সম্মানিত সুধী! আল্লাহ তা'আলা কুরআন মাজীদে তাঁর ফজল ও রহমত পেয়ে আনন্দ প্রকাশ করার নির্দেশ দিয়েছেন। আল্লাহ তা'আলা আমাদের প্রতি অগণিত অনুগ্রহ ও রহমত করেছেন এটা বাস্তব, তবে তন্মধ্যে সবথেকে বড় রহমত করেছেন নবী কারীম সাল্লাল্লাহু সাল্লাম কে আমাদের মধ্যে প্রেরণ করে। তাই নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে পেয়ে আনন্দ প্রকাশ করাটা আল্লাহ তায়ালার নির্দেশের অন্তর্ভুক্ত। যা নিম্নোক্ত আয়াত সমূহ হতে প্রতীয়মান হয়-
قُلۡ بِفَضۡلِ اللّٰہِ وَ بِرَحۡمَتِہٖ فَبِذٰلِکَ فَلۡیَفۡرَحُوۡا ؕ ہُوَ خَیۡرٌ مِّمَّا یَجۡمَعُوۡنَ ﴿۵۸﴾
অনুবাদ! আপনি বলুন, ‘আল্লাহ্রই অনুগ্রহ ও তারই রহমত, সেটারই উপর তাদের আনন্দ প্রকাশ করা উচিত। তা তাদের সমস্ত ধন-দৌলত অপেক্ষা শ্রেয়।
{{ সূরা ইউনুস আয়াত নং-58 }}
✴️উপরোক্ত আয়াতে আল্লাহ তা'আলা তাঁর প্রেরিত ফযল ও রহমতের উপর আনন্দ ও খুশি প্রকাশ করার আদেশ দিয়েছেন আর এটা নিঃসন্দেহে সবারই জানা যে, আল্লাহ তাআলার সমস্ত ফযল ও রহমতের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ রহমত ও ফযল হলেন তাঁর প্রিয়তম রাসূল মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
যা নিম্নোক্ত আয়াত থেকেও স্পষ্টতই প্রতীয়মান হয়। আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেন👇
وَ مَاۤ اَرۡسَلۡنٰکَ اِلَّا رَحۡمَۃً لِّلۡعٰلَمِیۡنَ ﴿۱۰۷﴾
অনুবাদ:- এবং আমি আপনাকে সমগ্র জগতের রহমতরূপেই প্রেরণ করেছি।
{{ সূরা আম্বিয়া আয়াত নং-107 }}
✴️সুতরাং আল্লাহ তাআলার প্রিয়তম রাসূল হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে রহমতস্বরূপ পেয়ে আমাদেরকে খুশি ও আনন্দ প্রকাশ করাটা একান্তই প্রয়োজন। তাই ঈদে মিলাদুন্নাবীর মাধ্যমে আমরা সেই আনন্দ ও খুশি প্রকাশ করি। কারণ মিলাদুন্নবীর অর্থই হলো নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আগমনের খুশি প্রকাশ করা।
✴️তাছাড়া আল্লাহ তা'আলা কুরআন শরীফের মধ্যে একাধিক জায়গায় তাঁর নিয়ামতসমূহকে স্মরণ ও চর্চা করতে বলেছেন। যেমন👇
وَ اذۡکُرُوۡا نِعۡمَۃَ اللّٰہِ عَلَیۡکُمۡ وَ مِیۡثَاقَہُ الَّذِیۡ وَاثَقَکُمۡ بِہٖۤ ۙ اِذۡ قُلۡتُمۡ سَمِعۡنَا وَ اَطَعۡنَا ۫ وَ اتَّقُوا اللّٰہَ ؕ اِنَّ اللّٰہَ عَلِیۡمٌۢ بِذَاتِ الصُّدُوۡرِ ﴿۷﴾
অনুবাদ:- এবং স্মরণ করো আল্লাহ্র অনুগ্রহকে তোমাদের উপর এবং ওই অঙ্গীকারকে, যা তিনি তোমাদের নিকট থেকে নিয়েছেন, যখন তোমরা বলেছিলে, ‘আমরা শুনেছি এবং মেনে নিয়েছি;’ আর আল্লাহ্কে ভয় করো। নিশ্চয় আল্লাহ্ অন্তরসমূহের কথা জানেন।
{{ সূরা মায়েদা আয়াত নং-7 }}
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوا اذۡکُرُوۡا نِعۡمَۃَ اللّٰہِ عَلَیۡکُمۡ
অনুবাদ:- হে ঈমানদারগণ! তোমাদের প্রতি আল্লাহ্র অনুগ্রহ স্মরণ করো
{{ সূরা আহযাব আয়াত নং-9 }}
وَ اَمَّا بِنِعۡمَۃِ رَبِّکَ فَحَدِّثۡ ﴿۱۱﴾
অনুবাদ:- এবং আপন রবের নি’মাতের খুব চর্চা করুন।
{{ সূরা দোহা আয়াত নং-11 }}
✴️সম্মানিত সুধী! আল্লাহ তায়ালা আমাদের প্রতিদিন ও প্রতিনিয়ত যত প্রকারের নেয়ামত প্রদান করেছেন তা গণনা করে আমরা শেষ করতে পারব না। আল্লাহ তায়ালা নিজেই এ
ইরশাদ করেন,
وَ اِنۡ تَعُدُّوۡا نِعۡمَۃَ اللّٰہِ لَا تُحۡصُوۡہَا ؕ اِنَّ اللّٰہَ لَغَفُوۡرٌ رَّحِیۡمٌ ﴿۱۸﴾
অনুবাদ:- এবং যদি আল্লাহ্র অনুগ্রহসমূহ গণনা করো, তবে সেগুলোর সংখ্যা নির্ণয় করতে পারবে না; নিশ্চয় আল্লাহ্ ক্ষমাপরায়ণ, দয়ালু।
{{ সূরা নাহাল আয়াত নং-18 }}
✴️তবে আমরা এ বিষয়ে অবশ্যই জ্ঞাত যে, আল্লাহর সমস্ত নেয়ামতের মধ্যে সবথেকে বড় নেয়ামত হলেন, তাঁর প্রিয় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
তাই এ প্রসঙ্গে আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু ইরশাদ করেন-
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا: {الَّذِينَ بَدَّلُوا نِعْمَةَ اللَّهِ كُفْرًا} قَالَ هُمْ وَاللَّهِ كُفَّارُ قُرَيْشٍ. قَالَ عَمْرٌو هُمْ قُرَيْشٌ وَمُحَمَّدٌ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نِعْمَةُ اللَّهِ
অর্থাৎ- ইবনু ‘আববাস রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি {اَلَّذِيْنَ بَدَّلُوْا نِعْمَةَ اللهِ كُفْرًا} অর্থাৎ ‘‘যারা আল্লাহর অনুগ্রহের পরিবর্তে অকৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে’’ সূরা ইবরাহীম-এর ২৮ আয়াতাংশ সম্পর্কে বলেছেন, আল্লাহর কসম, এরা হল কাফির কুরাইশ গোষ্ঠী। ‘আমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, এরা হচ্ছে কুরাইশ গোষ্ঠী এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম হচ্ছেন আল্লাহর নি‘য়ামাত ও অনুগ্রহ।
{{ সহীহ বুখারী হাদিস নং-«3977 }}
✴️ উপরোক্ত আয়াত সমূহের পরিপ্রেক্ষিতে অবশ্যই প্রমাণিত হল যে, আল্লাহ তাআলা তাঁর নেয়ামত ও অনুগ্রহ কে স্মরণ ও চর্চা করার নির্দেশ দিয়েছেন। আর কুরআন শরীফের আয়াত ও বুখারী শরীফ এর হাদীস থেকে প্রতীয়মান হল যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হলেন আল্লাহর সর্বশ্রেষ্ঠ ও উল্লেখযোগ্য নেয়ামত ও অনুগ্রহ সুতরাং যখন নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের চর্চা ও স্মরণ করা কুরআন ও হাদীস থেকেই প্রতীয়মান হয় তাহলে নবী দিবসে রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের চর্চা ও স্মরণ করা কি করে নাজায়েয ও গুনাহের কাজ হতে পারে?
আল্লাহ তা'আলা সবাইকে সঠিক বুঝ দান করুন!
✍️ মুফতী আমজাদ হুসাইন সিমনানী সাহেব
🌍কুশমন্ডি, দক্ষিণ দিনাজপুর, পশ্চিমবঙ্গ 🌍
Comments -