মুহাররম মাসের (আশুরার)ফজিলত ও করণীয়_ বর্জনীয়, Mufti Abu bakr misbahi
মুহাররম মাসের (আশুরার)ফজিলত ও করণীয়_ বর্জনীয়🌼
✍️ইসলামী বছরের প্রথম মাস, যাকে মুহাররমুল হারাম বলা হয়, যেটি ভালবাসা ও আনুগত্য, ত্যাগ-তিতিক্ষা ও বলিদান এবং অগণিত পুণ্য ও ঐশ্বর্যে ভরপুর। মুহাররম মাসে এমন একটি দিন রয়েছে যার ফজিলত পবিত্র কোরআন, নবিজীর হাদীস এবং জীবনী ও ইতিহাস গ্রন্থে উল্লেখিত আছে। ওই দিনটিকে ‘আশুরার দিন’ বলা হয়।
পবিত্র ক্বোরআনে রয়েছে :
اِنَّ عِدَّۃَ الشُّہُوۡرِ عِنۡدَ اللّٰہِ اثۡنَا عَشَرَ شَہۡرًا فِیۡ کِتٰبِ اللّٰہِ یَوۡمَ خَلَقَ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضَ مِنۡہَاۤ اَرۡبَعَۃٌ حُرُمٌ ؕ ذٰلِکَ الدِّیۡنُ الۡقَیِّمُ ۬ۙ فَلَا تَظۡلِمُوۡا فِیۡہِنَّ اَنۡفُسَکُمۡ
অনুবাদ:" নিশ্চয় মাসগুলোর সংখ্যা আল্লাহ্র নিকট বার মাস, আল্লাহ্র কিতাবের মধ্যে, যখন থেকে তিনি আসমান যমীন সৃষ্টি করেছেন। তন্মধ্যে চারটা (মুহাররম, রজব আল-মুরাজ্জাব, যুলক্বাদাহ এবং যুল হিজ্জাহ) সম্মানিত। এটা সোজা দ্বীন। সুতরাং এ মাসগুলোর মধ্যে নিজেদের আত্নাগুলোর উপর যুলুম করো না"
(সূরা তাওবাহ , আয়াত : ৩৬)
*মুহাররম মাসকে "মুহাররম মাস" কেন বলা হয় :-*
মুহররম শব্দটি " حرم হারাম" থেকে এসেছে যার অর্থ সম্মান ও মর্যাদা। "মুহাররম" বলার এটাও একটি কারণ যে , আরববাসীরা এই মাসে তাদের অস্ত্রশস্ত্র উঠিয়ে রাখতো এবং লুটপাট, ডাকাতি ও হত্যা ইত্যাদি থেকে বিরত থাকতো, এমনকি তারা তাদের শত্রুদেরও ভয় পেত এবং যখন তারা তাদের পিতা বা ভাইয়ের হত্যাকারীর সাথে সাক্ষাৎ করত, তখন তারা তাকে কিছু জিজ্ঞাসা করত না এবং কারও সাথে যুদ্ধ করত না, মোট কথা জাহিলিয়াতের যুগেও আরববাসীরা মুহাররম মাসের সম্মান করতো এবং যুদ্ধ বিদ্রোহ থেকে বিরত থাকতো। তারা এই মাসে যুদ্ধকে হারাম মনে করত।
আল্লাহর প্রিয় নবী স্বল্লল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম_এর আগমনের পর ইসলামে এই পবিত্র মাসের পবিত্রতা ও মাহাত্ম্য আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।
আল্লাহ সর্বশক্তিমান মালিক ও মুখতার , তিনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন এবং যাকে ইচ্ছা শাস্তি দেন। কখনো ছোটখাট নেকির কারণে অনুগ্রহ করে ক্ষমা করে দেন, আবার কখনো ছোট্ট গুনাহের গিরিফত করেন। সুতরাং কোন নেকিকে ছোট ভেবে পরিত্যাগ করা উচিত নয়, হয়তো ওই ছোট্ট নেকিটি আমাদের ক্ষমা ও পাপমোচনের মাধ্যম হতে পারে।
*এই পবিত্র মাসে রোজা রাখার সওয়াব*
১/ নবী করীম স্বল্লল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন : "মুহাররমুল হারাম মাসের প্রত্যেকটি রোজা এক মাসের রোজার সমতুল্য"।
(মু'জামে_ সাগীর, খণ্ড 2, পৃ. 71)
২/ এক বছরের গুনাহ মুছে যায়ঃ
হজরত সাইয়্যিদুনা আবু কাতাদা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ স্বল্লল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: আমি আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস রাখি যে, আশুরার রোজা বিগত বছরের গুনাহ মাফ করে দেয়। (মুসলিম শরীফ, পৃ. ৪৫৪, হাদিস নম্বর : ২৭৪৬)
৩/
. عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رضی الله عنهما قَالَ: قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ: مَنْ صَامَ یَوْمَ عَرَفَةَ کَانَ لَهٗ کَفَّارَةَ سَنَتَیْنِ، وَمَنْ صَامَ یَوْمًا مِنَ الْمُحَرَّمِ فَلَهٗ بِکُلِّ یَوْمٍ ثَـلَاثُوْنَ یَوْمًا.
رَوَاهُ الطَّبَرَانِيُّ بِإِسْنَادٍ لَا بَأْسَ بِهٖ.
أخرجہ الطبراني في المعجم الصغیر، 2: 164، الرقم: 963، وأیضًا في المعجم الکبیر، 11: 72، الرقم: 11081، وذکرہ المنذري في الترغیب والترھیب، 2: 70، الرقم: 1529، والھیثمي في مجمع الزوائد، 3: 190.
অনুবাদ : - হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাদিয়াল্লাহু আনহুমা) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (স্বল্লল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন: যে ব্যক্তি আরাফার দিনে রোজা রাখবে, তার দুই বছরের গুনাহ মাফ হয়ে যাবে, আর যে ব্যক্তি মুহাররমের একদিন রোজা রাখবে, সে প্রতি এক দিনের জন্য। ত্রিশ দিনের (রোযার) সওয়াব পায়।
এটিকে ইমাম তাবরানী মাহফুজ সনদ সহ বর্ণনা করেছেন।
আশুরার দিনে রোজা রাখা সুন্নত :-
৪/
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رضی الله عنهما، أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ قَدِمَ الْمَدِیْنَةَ فَوَجَدَ الْیَهُوْدَ صِیَامًا یَوْمَ عَاشُوْرَاءَ، فَقَالَ لَهُمْ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ: مَا هٰذَا الْیَوْمُ الَّذِي تَصُوْمُوْنَهٗ؟ فَقَالُوْا: هٰذَا یَوْمٌ عَظِیْمٌ أَنْجَی اللهُ فِیْهِ مُوْسٰی وَقَوْمَهٗ وَغَرَّقَ فِرْعَوْنَ وَقَوْمَهٗ، فَصَامَهٗ مُوْسٰی شُکْرًا، فَنَحْنُ نَصُوْمُهٗ. فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ: فَنَحْنُ أَحَقُّ وَأَوْلٰی بِمُوْسٰی مِنْکُمْ. فَصَامَهٗ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ وَأَمَرَ بِصِیَامِهٖ.
مُتَّفَقٌ عَلَیْهِ
أخرجہ البخاري في الصحیح، کتاب الأنبیاء، باب قول الله تعالی: وھل أتاک حدیث موسی، 3: 1244، الرقم: 3216، ومسلم في الصحیح، کتاب الصیام، باب صوم یوم عاشوراء، 2: 796، الرقم: (2)1130، وابن ماجہ في السنن، کتاب الصیام، باب صیام یوم عاشوراء، 1: 552، الرقم: 1734، وأحمد بن حنبل في المسند، 1: 336، الرقم: 3112.
অনুবাদ:-আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা) বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ (স্বল্লল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন মদিনায় এলেন, তখন তিনি দেখতে পেলেন ইহুদীরা আশুরার দিনে রোজা পালন করছে। তখন রসূলুল্লাহ (স্বল্লল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদেরকে জিজ্ঞেস করলেনঃ এটা কোন্ (বিশেষ) দিনে তোমরা রোযা রাখ? তিনি বললেনঃ এটি একটি মহান দিন যেদিন আল্লাহ তায়ালা মুসা (আলাইহিস সালাম) ও তাঁর অনুসারীদেরকে রক্ষা করেছিলেন এবং ফেরাউন ও তার সম্প্রদায়কে ডুবিয়ে ছিলেন। হজরত মুসা (আলাইহিস সালাম) সেদিন শুকরিয়ার্থে রোজা রেখেছিলেন, তাই আমরাও রোজা রাখি। এ প্রসঙ্গে রসূলুল্লাহ (স্বল্লল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ আমরা তোমাদের চেয়ে মূসার অধিক হকদার ও নিকটবর্তী। তাই সেদিন আল্লাহর রাসূল (সৃবল্লল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজেও রোজা রেখেছিলেন এবং সাহাবীগণকে, (আল্লাহ তাদের উপর রহমত বর্ষণ করুন) সেই দিন রোজা রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
এ হাদীসটি (ইমাম বুখারী ও ইমাম মুসলিম উভয়েই উল্লেখ করেছেন)
৫/ হজরত সাইয়েদুনা আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত আছে যে, মহানবী (স্বল্লল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম.) স্বয়ং আশুরার দিন রোজা রেখেছেন এবং তা পালনের নির্দেশ দিয়েছেন। (বুখারী, ১ম খন্ড, পৃ. ৬৫৬)
প্রচলিত তাজিয়াএবং অন্যান্য কু-প্রথার বিবরণ:
মুহাররমের ১০ তারিখে জলসা অনুষ্ঠিত করা এবং কারবালার ঘটনা বর্ণনা করা শুধু জায়েজই নয়, বরং অত্যন্ত ভালো একটি আমল। তবে শর্ত হলো সহীহ হাদীসগুলো সঠিকভাবে বর্ণনা করা এবং গ্রহণযোগ্য রেওয়াইয়াত ব্যতীত মনগড়া ইতিহাস না বলা।সাইয়্যিদুনা ইমাম হোসাইন (রাদিয়াল্লাহু আনহু) ও কারবালার অন্যান্য শহীদদের জন্য ঈসালে_সওয়াবের উদ্দেশ্যে ক্বোরআন শরীফ তেলাওয়াত করা, দরুদ শরীফ পাঠ করা,আশুরার রাতে নাওয়াফিল আদায় করা এবং দিবায় রোজা রাখা, দুধ বা শরবত, মিষ্টি বা রুটি ইত্যাদির উপর ফাতিহা দেওয়া, খিচুড়ি রান্না করা, গ্রীষ্মকালে শরবত বিতরণ করা, শীতকালে চা পান করানোর ব্যবস্থা করা সবই জায়েয ও সওয়াবের কাজ। হাদীস শরিফে রয়েছে :-
"قال صلي الله عليه وسلم ما اطعمت نفسک فهو لک صدقة"
অনুবাদ:- তুমি নিজেকে যা খাওয়াবে তাও তোমার জন্য দান।
(মুসনাদে আহমদ বিন হাম্বল ,খন্ড : ৪ ,পৃষ্ঠা ১৩১ সংগৃহীত : ফাতাওয়া রাজাভিয়া শরীফ, খন্ড:২৪)
হযরত আনাস ইবনে মালিক রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত: রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এরশাদ করেন :
اذا کثرت ذنوبک فاسق الماء علي الماء تتناثر کما يتناثر " الورق من الشجر "
অনুবাদ: যখন তোমার পাপ বেশি হবে, পানির উপর পানি ঢালো তোমার পাপগুলো ধুয়ে যাবে যেমনি ভাবে গাছের পাতা বায়ু-বৃষ্টিতে ধুয়ে যায়।
আল্লাহর রসূল স্বল্লল্লাহু আলাই সাল্লাম ইরশাদ করেন:
"من استطاع منکم ان ينفع اخاه فلينفعه"
অনুবাদ : তোমাদের মধ্যে যে তার ভাইয়ের উপকার করার ক্ষমতা রাখে সে যেন তার ভাইয়ের উপকার করে।
(মুসলিম শরীফ, কিতাবুস সালাম, সংগৃহীত: ফাতাওয়া রাজাভিয়া শরীফ খন্ড: ২৪,পৃষ্ঠা :৫০৪)
আল্লাহর রসূল স্বল্লল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:
ان الله عزوجل يباھي ملئکته بالذين يطعمون الطعام من عبيده
অনুবাদ: আল্লাহ তাআলা নিজ ফারিস্তাদের সম্মুখে ওই বান্দাদের প্রতি মুবাহাত/ প্রশংসা করেন যারা আহার করায়:" বলেন দেখো তারা কত ভালো কাজ করছে।"
(আত্তারগিব ওয়াক্তারহিব, খন্ড: ২, পৃষ্ঠা: ৬৮, সংগৃহীত: ফাতাওয়া রাজাভিয়া শরিফ, খন্ড: ২৪ পৃষ্ঠা ৫২২)
সুতরাং এটাকে বিদআত ও গোমরাহী বলা মুর্খামি ও ওয়াহাবীদের আলামত। কিন্তু প্রচলিত তাজীয়া অর্থাৎ সিংহাসন বানানো, ঢোল বাজানো, ধুমধাম করে তাজীয়াকে অলি গলিতে প্রদর্শন করা, মুহাররম মাসে শোক পালন করা, সন্তানদের ফকির বেশে ঘরে ঘরে ভিক্ষা চাওয়ানো , মুর্শিয়া ও মাতম করা , খঞ্জর মারা, বুক চাপড়ানো, অলি গলিতে অস্ত্রশস্ত্র প্রদর্শন করা, লাঠি খেলা , নকল কারবালা ময়দান তৈরি করে ওখানে মেলা লাগানো, ৭ই মুহাররমে হযরত কাসিমের মেহেন্দি অপসারণ করা এগুলি এবং এ জাতীয় সকল কূপ্রথা তীব্র নিন্দনীয় ও কুসংস্কার।
হাদীস শরীফে রয়েছে:
"نھي رسول الله صلي الله عليه وسلم عن المراثي"
অনুবাদ: আল্লাহর রসূল স্বল্লল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মর্সিয়া করতে নিষেধ করেছেন।
অনুরূপ মাতম করা বুক চাপড়ানো হারাম ও কঠোর নিষিদ্ধ।
(মুসনাদে আহমদ বিন হাম্বল ,খন্ড :৪পৃষ্ঠা ৩৫৬)
আফসোসের বিষয় যে, কারবালার ঘটনার মতো শিক্ষণীয় ঘটনাকেও দুনিয়ার মানুষ খেলাধুলা ও বিনোদনের উৎস হিসেবে গড়ে তুলেছে। ঢোল , বাজনা তামাশার মতো অপব্যয় ও অপ্রয়োজনীয় কাজে অর্থ ব্যয় করছে। যদি ইসলামি মাদ্রাসা ও দ্বীনী স্কুল নির্মাণে ও শিক্ষাদানে ব্যয় করা হতো এবং এতিম ও বিধবা এবং দরিদ্র ও নিঃস্ব মেয়েদের বিবাহের ব্যবস্থা করা হতো, তাহলে ইমাম হোসাইন (রাদিয়াল্লাহু আনহু) খুশি হতেন।
কালামে_রেজা
"কাম ওহ লে লিজিয়ে তুমকো জো রাজি করে
ঠিক হোক নামে রাজা তুমপে কারোরো দরুদ"
*মুহাররম সম্পর্কিত কিছু মাসায়েল:-
১> ইমাম আহমদ রাযা খান মুহাদ্দিসে বেরেলভী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, প্রচলিত তাজিয়া করা বিদ'আত ও নাজায়েজ , তার পরিদর্শন করা না জায়েজ এবং তার শ্রদ্ধা ও সম্মান কঠোর হারাম এবং খুব খারাপ বিদ'আত।(ফাতাওয়া রজভীয়া শরীফ, খন্ড :২৪, পৃষ্ঠা : ৪৯০)
২> ইমাম আহলে সুন্নাত ইমাম আহমাদ রেজা খান বেরেলভী বলেন, মুহাররমের প্রথম ১০ দিনে রুটি না সেঁকা, ঘরে ঝাড়ু না দেওয়া, পুরোনো কাপড় না খোলা (অর্থাৎ পরিষ্কার পোশাক না পরিধান করা) এবং মুহাররম মাসে বিবাহ না দেওয়া এসবই হল শোক পালন আর শোক পালন হারাম ।
এবং ইমাম হুসাঈন ও হাসান রাদিয়াল্লাহু আনহুমা ব্যতীত অন্য কারো নামে ফাতেহা না দেওয়া অজ্ঞতা।
(ফতাওয়া রাজাভিয়া শরীফ খন্ড :২৪, পৃষ্ঠা : ৪৮৯)
৩>তাজিয়ার তামাশা দেখা কি?
ইমাম আহমদ রাযা খান মুহাদ্দিস বেরেলভী (রহমাতুল্লাহি আলাই) বলেন, যেহেতু তাজিয়া করা নাজায়েজ, সেহেতু নাজায়েজ জিনিসের দৃশ্য দেখাও নাজায়েজ।
(মালফুজাতে_ আলা হযরত ,পৃষ্ঠা : ২৮৬)
(৪)> তাজিয়ার মান্নত করা কী?
ইমাম আহমদ রযা খান মুহাদ্দিসে_বেরেলভী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, তাজীয়ার মান্নত করা অবৈধ ও নাজায়েজ।
আল্লাহর রসূল স্বল্লল্লাহু আলাই সাল্লাম ইরশাদ করেন:
"لا نذر في معصية"
অনুবাদ: পাপ কাজের কোন মান্নত হয় না।
(আবু দাউদ শরীফ ,কিতাবুল ঈমান, বাবু মান রায়া আলাইহি)
৬ মুহাররমের সময় তিন রঙের পোশাক পরিধান করার নিষিদ্ধতা:-
ইমাম আহমদ রেজা খান মুহাদ্দিসে_বেরেলভী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, মুহাররমের সময় (বিশেষ করে মুহাররমের ১লা থেকে ১০ই তারিখ পর্যন্ত) তিন রঙের কাপড় পরিধান করা উচিত নয়:- সবুজ কাপড় পরিধান করা উচিত নয়। কারণ এটি তাজিয়াদারদের তরিকা, লাল পোশাক পরিধান করা উচিত নয়, কারণ এটি আহলে বাইতকে যারা ঘৃণা করে তাদের পথ এবং কালো পোশাক পরিধান করা উচিত নয় ,কারণ এটি রাফেযীদের পথ, তাই মুসলমানদের এগুলো এড়িয়ে চলা উচিত।
(আহকামে_ শরীয়ত)
৭>- আশুরার মেলা :-
ইমাম আহমাদ রেযা খান মুহাদ্দিসে_বেরেলভী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, আশুরার মেলা বাতিল ও নিষিদ্ধ।
(ফাতাওয়া রাযাভিয়া, খন্ড :২৪ , পৃষ্ঠা :৫০২)
আল্লাহ পাকের দরবারে দোয়া আমাদের সকলকে পবিত্র মুহাররমুল হারাম মাস সিয়াম সাধনা ও উপাসনার মাধ্যম দিয়ে অতিবাহিত করার তৌফিক দান করুন।
আমীন والله اعلم.
ইতি
আবু বকর মিসবাহী
নায়েব শাইখুল হাদীস দারুল উলুম রাজায়ে_মুস্তাফা ও পেশ ইমাম সুন্নি হানাফী জামে মসজিদ
মেটিয়াবুরুজ, কলকাতা-১৮
২৮ জিলহিজ্জ্যা ১৪৪৪ হিজরি
১৭ ই জুলাই ২০২৩
রোজ সোমবার
Comments -